ফেরেশতা সম্পর্কে আহলুস সুন্নাহর আকিদা


ফেরেশতাকুলের প্রতি বিশ্বাস নিম্নের বর্ণনা মোতাবেক হতে হবে: ফেরেশতামণ্ডলী খোদা তায়া'লার সৃষ্টি। তাঁরা তাঁর শরীক (অংশীদার) নন, পুত্র কিংবা কন্যাও নন – যেভাবে কাফের ও মুশরিকরা ধারণা করতো। আল্লাহতায়া'লা তাঁর সকল ফেরেশতাকেই ভালোবাসেন। তাঁরা আল্লাহতায়া'লার আদেশ মান্য করেন এবং কখনোই পাপ সংঘটন কিংবা আদেশ অমান্য করেন না। তাঁরা পুরুষ কিংবা নারী নন। তাঁরা বিয়েও করেন না। তাঁদের কোনো সন্তানও নেই। তাঁদের জীবন আছে; অর্থাৎ, তাঁরা জীবিত।



❏ তবে হযরত আবদুল্লাহ্ ইবনে মাসউদ (رضي الله عنه) হতে বর্ণিত একটি রওয়ায়াত অনুসারে কতিপয় ফেরেশতার সন্তান ছিল, যাদের মধ্যে শয়তান ও জীনদেরকে ধরা হয়ে থাকে; এর তা’বিল (বিশদ ব্যাখ্যা) বিভিন্ন বই-পুস্তকে লিপিবদ্ধ করা হয়েছে।



❏ যখন আল্লাহ্ পাক ঘোষণা করেন যে তিনি মানব জাতিকে সৃষ্টি করতে ইচ্ছুক, তখন ফেরেশতাবৃন্দ আরয করেন,


 إِنِّي جَاعِلٌ فِي الْأَرْضِ خَلِيفَةً قَالُوا أَتَجْعَلُ فِيهَا مَنْ يُفْسِدُ فِيهَا وَيَسْفِكُ الدِّمَاءَ –


"হে আল্লাহ পাক! আপনি কি ওদের সৃষ্টি  করবেন যারা দুনিয়ার বুকে ফিতনা ও রক্তপাত ঘটাবে?”



🔺[২] আল কুরআন : আল বাকারা, ২:৩০।



“যাল্লা” নামক তাঁদের এ সকল প্রশ্ন ফেরেশতাদের ক্রটিহীনতার কোনো ক্ষতি সাধন করে না।



সকল সৃষ্টির মধ্যে ফেরেশতাবৃন্দ-ই হলেন অধিক সংখ্যক। আল্লাহ্ ছাড়া আর কেউই তাঁদের সংখ্যা জানেন না। আসমানে এমন কোনো খালি জায়গা নেই যেখানে ফেরেশতামণ্ডলী এবাদত করেন না। আসমানের প্রত্যেক জায়গা-ই রুকূকারী কিংবা সেজদাকারী ফেরেশতাদের দ্বারা পরিপূর্ণ। আসমানে, পৃথিবীতে, ঘাসে, তারা-নক্ষত্রে, সকল জীবিত ও জড় সৃষ্টিতে, প্রতিটি বৃষ্টির ফোঁটায়, বৃক্ষলতায়, অণু-পরমাণুতে, প্রত্যেক প্রতিক্রিয়ায়, স্পন্দনে, এক কথায়, সকল বিষয়ে ফেরেশতাবৃন্দের কর্তব্য নিহিত। সর্বত্র তাঁরা আল্লাহতায়া'লার আদেশ পালন করে থাকেন। আল্লাহতায়া'লা ও সৃষ্টিজগতের মধ্যে তাঁরা হলেন মধ্যস্থতাকারী। তাঁদের কেউ কেউ আবার অন্যান্য ফেরেশতাদের সরদার (আমীর)। মানবের মধ্যে নবীবৃন্দের (عليه السلام) কাছে তাঁদের কেউ কেউ বার্তা বহন করে নিয়ে এসেছেন। মানব অন্তরে কতিপয় ফেরেশতা “এলহাম” (ঐশী প্রত্যাদেশ) নামক ভালো/সৎ চিন্তা বহন করে নিয়ে আসেন। অপর কয়েকজন ফেরেশতা আল্লাহতায়া'লার জামাল (সৌন্দর্য) অনুভব করে চেতনালুপ্ত হয়ে মানবকুল ও সৃষ্টিজগৎ সম্পর্কে অনবধান অবস্থায় আছেন। প্রত্যেক ফেরেশতা-ই নির্দিষ্ট একটি স্থানে অবস্থান করেন। তাঁরা তাঁদের স্থানত্যাগ করতে পারেন না। কারো কারো দুইটি পাখা আছে, কারো বা চারটি কিংবা ততোধিক। বেহেশতের ফেরেশতাবৃন্দ সেখানে অবস্থান করেন। তাঁদের নেতা হলেন “রিদ্ওয়ান”। জাহান্নামের ফেরেশতামণ্ডলী যাঁদের নাম “যাবানী”, তাঁরা জাহান্নামে যা করতে আদিষ্ট হন, তা তাঁরা পালন করেন। সমুদ্র যেমন মাছের জন্যে ক্ষতিকর নয়, তেমনি জাহান্নামের আগুনও তাঁদের কোনো  ক্ষতি করতে সক্ষম নয়। ’যাবানী’দেরকে ১৯জন নেতৃত্ব দেন। তাঁদের প্রধান হলেন “মালিক”।

_____________

কিতাবঃ ঈমান ও ইসলাম

মূল: মওলানা খালেদ আল-বাগদাদী  (رحمة الله)  

অনুবাদ: কাজী সাইফুদ্দীন হোসেন

 🌍 ইসলামী বিশ্বকোষ এপ্স।

https://play.google.com/store/apps/details?id=com.islamboi.rizwan]


Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন