🔴প্রশ্নঃ “গোমরাহ-পথভ্রষ্টদের বইপত্রের অনুবাদ যে ব্যক্তি পড়েছে, সে বলে: ‘আমাদের উচিত ক্বুরআন মজীদের ব্যাখ্যা (তাফসীর) পাঠ করা। আমাদের দ্বীন ও আল-ক্বুরআনকে বোঝার কাজ আলেম-উলামার ওপর ন্যস্ত করা একটি বিপজ্জনক ও ভয়ানক চিন্তা। ক্বুরআনুল করীম এ কথা বলে সম্বোধন করে না – ওহে ধর্মীয় আলেমবর্গ, বরং সম্বোধন করে এই বলে – ওহে মুসলমান সম্প্রদায়, ওহে মানবজাতি। এই কারণে প্রত্যেক মুসলমানের উচিত নিজে নিজে ক্বুরআন উপলব্ধি করা এবং অন্যের ওপর ভরসা না করা।’
“সে সবাইকে তাফসীর ও হাদীস গ্রন্থাবলী পড়তে দেখতে চায়। পক্ষান্তরে, সে ইসলামী বিদ্বান ও আহলে সুন্নাতের মহান জ্ঞান বিশারদদের লেখা কালামশাস্ত্র, ফেক্বাহশাস্ত্র ও ‘এলম-এ-হাল’ পুস্তকাদি পাঠ করতে মানা করে। উপরন্তু, তুর্কী সরকারের ধর্মবিষয়ক কেন্দ্রীয় দপ্তর কর্তৃক প্রকাশিত (প্রকাশনা নং ১৫৭; ১৩৯৪ হিজরী/১৯৭৪) রশীদ রেযা’র ‘ইসলামদা বিরলিক ভা ফিকহ মাযহাবলারি’ শিরোনামের তুর্কী বইটি পাঠক সমাজে আরো বেশি বিভ্রান্তি ছড়িয়েছে।
বইটির অনেক পৃষ্ঠায়, বিশেষ করে ‘ষষ্ঠ সংলাপে’ লেখা হয়েছে:
رُفِعُوا قَدْرُ الْمُجْتَهِدِيْنَ اِلَيْ مَرْتَبَةِ ألأَنْبِيَاءِ
‘মুক্বাল্লিদবর্গ (চার মাযহাবের কোনোটির অনুসারীবৃন্দ) তাদের মুজতাহিদ ইমামদের এমন প্রশংসা করেছে যে নবুয়্যতের পর্যায়ে তুলেছে। তারা এমন কী রাসূলুল্লাহ (ﷺ)’এর হাদীসের সাথে ভিন্নমত পোষণকারী কোনো মুজতাহিদের কথাকে ওই হাদীসের ওপরে প্রাধান্য দিয়েছে। তারা বলেছে হাদীসটি হয়তো নাসখ (রহিত), নতুবা তাদের ইমামের দৃষ্টিতে হয়তো অন্য আরেকটি হাদীস রয়েছে। ভুল করতে পারেন এবং বিষয়বস্তু সম্পর্কে নাও জানতে পারেন এমন সব (মুজতাহিদ) ব্যক্তির কথার ওপর আমল/অনুশীলন করে, অধিকন্তু অভ্রান্ত রাসূলে পাক (ﷺ)’এর হাদীস ছেড়ে দিয়ে এসব মুক্বাল্লিদ তাদের মুজতাহিদদের সাথেও ভিন্নমত পোষণ করেছে। তারা এ রকম করে এমন কী আল-ক্বুরআনের সাথেও মতভেদ করেছে। তারা দাবি করে মুজতাহিদ ছাড়া অন্য কেউই আল-ক্বুরঅান বুঝতে সক্ষম নয়। ফক্বীহ ও অন্যান্য মুক্বাল্লিদদের এ ধরনের কথা প্রতীয়মান করে যে তারা এগুলো ইহুদী ও খৃষ্টানদের কাছ থেকে গ্রহণ করেছে। অপর দিকে, ফেক্বাহবিদদের লেখা বইপত্র উপলব্ধির চেয়ে ক্বুরআন-হাদীস আরো সহজে বোধগদম্য। যারা আরবী শব্দ ও ব্যাকরণ রপ্ত করেছেন, তারা ক্বুরআন-হাদীস বুঝতে মোটেও অসুবিধা বোধ করবেন না। দুনিয়াতে কে অস্বীকার করতে পারে এই বাস্তবতাকে যে আল্লাহতায়া'লা তাঁর ধর্মের স্পষ্ট ব্যাখ্যা দিতে সক্ষম? আর এই বাস্তবতার প্রতিও বা কে আপত্তি উত্থাপন করতে পারে যে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) আল্লাহ যা বুঝিয়েছেন তা সবার চেয়ে ভালো বুঝতে সক্ষম ছিলেন এবং অন্যান্যদের চেয়ে ভালোভাবে তা ব্যাখ্যা করতেও সক্ষম ছিলেন? মহানবী (দ;)’র ব্যাখ্যাগুলো মুসলমানদের জন্যে অপর্যাপ্ত বলাটা তিনি যথাযথভাবে তাবলীগ (ধর্ম প্রচার)’এর দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়েছেন মর্মে দাবি করারই সামিল। যদি সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণ ক্বুরআন-সুন্নাহ উপলব্ধি করতে অক্ষম হতেন, তাহলে আল্লাহতায়া'লা সবাইকে কিতাবুল্লাহ ও সুন্নাহ’র বিধান মান্য করার দায়ভার অর্পণ করতেন না। প্রত্যেকের জানা উচিত যে তিনি প্রামাণ্য দলিলাদিসহ বিশ্বাস (ঈমান) স্থাপন করে থাকেন। আল্লাহ পাক তাক্বলীদ (মাযহাবের অনুসরণ)’কে অনুমোদন করেন না এবং তিনি (পাক কালামে) বলেন যে মুকাল্লিদদের দ্বারা তাদের বাপ-দাদাদের অনুসরণের ওজর গ্রাহ্য হবে না। আয়াতসমূহ পরিদৃষ্ট করে যে আল্লাহ পাক কখনোই তাক্বলীদকে অনুমোদন করেন না। ধর্মের ফুরূ (শাখা) অংশকে তার দলিলাদি দ্বারা বোঝাটা ঈমান/উসূল-সংক্রান্ত অংশটি অনুধাবন করা হতেও সহজতর। আল্লাহ কষ্টসাধ্য অংশটির ব্যাপারে দায়িত্ব দেয়ার কালে সহজসাধ্যটির ব্যাপারেও কি দায়িত্ব দেবেন না? কতিপয় বিরল বিষয়ে শরঈ আইনকানুন বের করাটা কঠিন হবে সত্য, তবে সে সময় সেগুলো সম্পর্কে না জানা বা সেগুলোর অনুশীলন না করার পক্ষে তা ওজর হিসেবে বিবেচিত হবে। ফিক্বাহবিদরা নিজেরাই কিছু মাস’আলা বা বিষয় উদ্ভাবন করে নিয়েছেন। তারা সেগুলোর নিয়মও প্রণয়ন করেছেন। এ ধরনের বিষয়াদিকে তারা ‘রায়’, ‘ক্বেয়াসে জলী’ ও ‘ক্বেয়াসে খফী’ নাম দিয়ে নিজেদের জন্যে দলিল হিসেবে দাঁড় করাতে চেষ্টা করেছেন। এগুলোকে এবাদতের অংশের ভেতরে উপচে পড়তে দেয়া হয়েছে, যেখানে যুক্তি-বিবেচনার মাধ্যমে জ্ঞান আহরণ করা অসম্ভব ব্যাপার। এর ফলে ফেক্বাহবিদরা ধর্মকে ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে অনেক গুণ বড় করেন। তারা মুসলমানদেরকে মসীবতে ফেলেন। আমি ক্বেয়াস’কে অস্বীকার করি না; কিন্তু আমি বলি, এবাদতের ক্ষেত্রে কোনো ক্বেয়াস নেই। ঈমান ও এবাদত মহানবী (ﷺ)’র যুগেই পূর্ণতা পেয়েছে। তাতে আর কেউই নতুন কিছু যোগ করতে পারবেন না। মুজতাহিদ ইমামবর্গ সর্বসাধারণকে তাক্বলীদ (অনুসরণ/অনুকরণ) মানতে নিষেধ করেছেন এবং এর (মানে তাক্বলীদের) ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন।’
“ওপরের এই উদ্ধৃতিটি, যা (তুরস্কের) ধর্মবিষয়ক কেন্দ্রীয় দপ্তর কর্তৃক প্রকাশিত বই হতে নেয়া হয়েছে, তা অন্যান্য সকল লা-মাযহাবী বইয়ের মতোই চার মাযহাবের ইমামমণ্ডলীর অনুসরণকে নিষেধ করে। এটা এ মর্মে আদেশ দেয় যে সবারই ক্বুরআনের তাফসীর ও হাদীস শিক্ষা করা উচিত। এ ব্যাপারে আপনি কী বলবেন?”
🖋উত্তরঃ লা-মাযহাবী/সালাফী ব্যক্তিটির (রশীদ রেযা’র) ওপরের উদ্ধৃতিটুকু মনোযোগসহ পড়লে যে কেউ দেখতে পাবেন যে গোমরাহ-পথভ্রষ্ট এই চক্র নিজেদের ভ্রান্ত চিন্তা ও বিচ্ছিন্নতাবাদী দৃষ্টিভঙ্গিকে নড়বড়ে যুক্তি ও মিথ্যে বক্তব্য দ্বারা সাজিয়ে মুসলমান সমাজকে ধোকা দিতে অপতৎপর। গণ্ডমূর্খ লোকেরা হয়তো এসব লেখনীকে জ্ঞান ও যুক্তিভিত্তিক ধারণা করে এগুলোর ধোকায় পড়ে যেতে পারে, কিন্তু জ্ঞানী ও দূরদৃষ্টিসম্পন্ন মানুষ লা-মাযহাবীদের এই ফাঁদে কখনো পা দেবেন না।
লা-মাযহাবী/সালাফী তথা সুন্নী-বিরোধীচক্রের বিপদ, যেটা মুসলমানদেরকে পরকালীন শাস্তির দিকে টেনে নিয়ে যাচ্ছে, সেটা সম্পর্কে তরুণ প্রজন্মকে সতর্ক করার উদ্দেশ্যে ইসলামী উলামাবৃন্দ গত চৌদ্দ শ বছর যাবৎ সহস্র সহস্র মূল্যবান বই লিখেছেন। ওপরের প্রশ্নের উত্তরে নিচে
❏ ইমাম ইঊসুফ নাবহানী (رحمة الله) প্রণীত ‘হুজ্জাত -আল্লাহি ‘আলাল-’আলামীন’ শীর্ষক পুস্তক হতে কিছু উদ্ধৃতি পেশ করা হলো:
واَلْحَاصِلُ اَنَّ أَئِمَّةَ الاُمَةُ لَماَ كَانُوْ لاَ قُدْرَةَ لَهُمْ عَلَيْ اسْتِنْبَاطِ جَمِيْعِ الْاَحْكَامِ مِنَ كِتَابِ اللهِ تَعَالَيْ شَرَّحَهُ رَسُوْلُ اللهُ صَلّيَ اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَفِيِ الحَقِيْقَةِ هِيَ مِنَ اللهِ الغ
“ক্বুরআনুল করীম হতে সবাই আহকাম (আইনকানুন, সিদ্ধান্ত) বের করার যোগ্যতাসম্পন্ন নয়। যেহেতু এমন কী মুজতাহিদ ইমাম-মণ্ডলীও ক্বুরআনুল করীমে বিরাজমান সমস্ত বিধান হতে আইনকানুন বের করতে সক্ষম হবেন না, সেহেতু রাসূলুল্লাহ (ﷺ) তাঁর হাদীসগুলোতে আল-কুরআনে বিদ্যমান বিধানগুলো ব্যাখ্যা করেছেন। যেহেতু ক্বুরআন মজীদ শুধুমাত্র তিনি-ই ব্যাখ্যা করেছেন, সেহেতু ওই হাদীসগুলো স্রেফ সাহাবা-এ-কেরাম (رضي الله عنه) ও মুজতাহিদ ইমামবৃন্দ (رحمة الله)-ই বুঝতে ও ব্যাখ্যা করতে সক্ষম ছিলেন। ইমামবৃন্দ (رحمة الله) যাতে এগুলো বুঝতে সক্ষম হন, সে জন্যে আল্লাহতায়া'লা তাঁদেরকে পার্থিব ও ধর্মীয় জ্ঞান, তীক্ষ্ণ উপলব্ধি ও দৃষ্টিশক্তি, অসাধারণ ধীশক্তি এবং আরো অনেক উন্নত বৈশিষ্ট্য দান করেন। এসব গুণের সর্বাগ্রে ছিলো তাক্বওয়া (খোদাভীরুতা/পরহেযগারী)। এরপর ছিলো তাঁদের অন্তরে অবস্থিত খোদায়ী নূর/ঐশী জ্যোতি। এসব অনন্য বৈশিষ্ট্যের সহায়তায় আমাদের মুজতাহিদ ইমাম-মণ্ডলী (رحمة الله) বুঝতে পারেন আল্লাহতায়া'লা ও তাঁর রাসূল (ﷺ) তাঁদের বাণীতে কী বোঝাতে চেয়েছেন; আর যেগুলো তাঁরা উপলব্ধি করতে পারেননি, সেগুলোর (সমাধান) ক্বেয়াস দ্বারা প্রদর্শন করেছেন। চারজন আয়েম্মাত আল-মুজতাহিদের (অর্থাৎ, মুজতাহিদ ইমাম-মণ্ডলীর) প্রত্যেকেই জানিয়েছেন যে তাঁরা তাঁদের নিজস্ব মতামতের ভিত্তিতে কোনো সিদ্ধান্ত দেননি; আর তাঁরা তাঁদের শিষ্যদের বলেছিলেন, ‘তোমরা যদি কোনো সহীহ হাদীস পাও, তাহলে আমার সিদ্ধান্ত বাদ দিয়ে রাসূলুল্লাহ (ﷺ)’এর হাদীসের অনুসরণ কোরো!’ চার মাযহাবের ইমামবৃন্দ (رحمة الله) যাঁদের প্রতি এ নির্দেশ দিয়েছিলেন, তাঁরাও তাঁদেরই মতো গভীর জ্ঞানী মুজতাহিদ আলেম ছিলেন। এই সমস্ত আলেম ছিলেন মুজতাহিদ তারজীহ (পার্থক্য করার যোগ্যতাসম্পন্ন মুজতাহিদ), যাঁরা চার মাযহাবের দলিলাদি সম্পর্কে জানতেন। তাঁরা দলিলগুলো এবং সেসব হাদীসের বর্ণনাকারীদের সম্পর্কে অধ্যয়ন করতেন, যে হাদীসের ওপর ভিত্তি করে মাযহাবের ইমাম সাহেব (رحمة الله) তাঁর এজতেহাদ প্রয়োগ করেছেন; আর (এর বিপরীতে) নতুন মোকাবেলাকৃত সহীহ হাদীসও তাঁরা দেখতেন এবং পরীক্ষা করতেন কোনটি পরবর্তীকালে বর্ণিত হয়েছে; এছাড়াও তাঁরা অন্যান্য অনেক শর্ত পরীক্ষা করতেন, যার ফলশ্রুতিতে তাঁরা বুঝতে পারতেন কোনটি বেছে নিতে হবে (তারজীহ)। অথবা, মুজতাহিদ ইমাম (আল-মাযহাব) কোনো মাস’আলা তথা বিষয়ের সমাধান দিতেন ক্বেয়াসের (মানে গবেষণালব্ধ সিদ্ধান্তের) মাধ্যমে, কেননা তিনি এর প্রামাণ্য হাদীসটি সম্পর্কে জানতেন না; তবে তাঁর শিষ্যবৃন্দ ওই হাদীসটি খুঁজে পেয়ে ভিন্ন সিদ্ধান্ত নিতেন। কিন্তু এ ধরনের এজতেহাদ প্রয়োগের সময় শিষ্য (কখনোই) মাযহাবের ইমামের (رحمة الله) উসূল/নিয়মকানুনের আওতাধীন সীমারেখার বাইরে যেতেন না। যেসব মুজতাহিদ মুফতী তাঁদের উত্তরসূরী ছিলেন, তাঁরাও এ পদ্ধতিতে ফতোয়া দেন। এখানে যা লেখা হয়েছে তা হতে বোঝা যায়, চারজন আয়েম্মাত আল-মাযাহিব ও তাঁদের মাযহাবগুলোতে প্রশিক্ষিত মুজতাহিদ-মণ্ডলীকে যে মুসলমানবৃন্দ অনুসরণ করেছেন, তাঁরা প্রকৃতপ্রস্তাবে আল্লাহতা’আলা ও তাঁর রাসূল (ﷺ)’এর বিধিবিধানকেই মান্য করেছেন। এই মুজতাহিদবৃন্দ আল-ক্বুরআন ও হাদীস শরীফে বিদ্যমান বিধানগুলো অনুধাবন করতে পেরেছিলেন, যা অন্য কেউই বুঝতে পারেনি; আর তাঁরা এ থেকে যা উপলব্ধি করেছিলেন, তা (আমাদের কাছে) ব্যক্ত করেছিলেন। মুজতাহিদবৃন্দ (رحمة الله) নস্ তথা শরঈ দলিল (ক্বুরআন মজীদ ও সুন্নাহ) হতে যা বুঝেছেন ও জ্ঞাত করেছেন, মুসলমানবৃন্দ সে অনুযায়ী আমল/অনুশীলন করেছেন। কেননা আল্লাহতায়া'লা সূরা নাহল ৪৩ আয়াতে ঘোষণা করেন: فاسألوا اهل الذكر إن كنتم لا تعلمون “তোমরা না জানলে জ্ঞানীদের কাছ থেকে জিজ্ঞেস করে শেখো।” {আল্লামা হুসাইন হিলমী (رحمة الله)’র নোট: এই আয়াতটি পরিস্ফুট করে যে সবাই ক্বুরআন ও সুন্নাহ’কে নির্ভুলভাবে বুঝতে সক্ষম নয়। উপলব্ধি করতে অক্ষম ব্যক্তিদের প্রতি আয়াতটি আদেশ করে যেনো তারা ব্যক্তিগতভাবে ক্বুরঅান-হাদীস উপলব্ধি করতে চেষ্টা না করে, বরঞ্চ যাঁরা তা বুঝেছেন তাঁদেরকে জিজ্ঞেস করে শিক্ষা করে। যদি সবাই ক্বুরঅান-হাদীসের অর্থ সঠিকভাবে বুঝতে সক্ষম হতো, তাহলে বাহাত্তরটি ভ্রান্ত ফেরকাহ/দলের আবির্ভাব ঘটতো না। এসব দলের প্রবর্তন যারা করেছিলো তারা বেশ শিক্ষিত ছিলো, কিন্তু তাদের কেউই ক্বুরআন-হাদীস সঠিকভাবে উপলব্ধি করতে সক্ষম ছিলো না। এগুলোকে ভুলভাবে বুঝে তারা সঠিক পথ হতে বিচ্যুত হয়েছিলো; আর অনেক মুসলমানকেও তারা গোমরাহীর দিকে টেনে নিয়ে গিয়েছিলো। এদের মধ্যে কেউ কেউ ক্বুরআন-হাদীসের এমন ভুল অর্থারোপ করেছে যে তারা সীমা লঙ্ঘন করে সঠিক পথের অনুসারী মুসলমানদেরকে ‘কাফের’/অবিশ্বাসী ও ‘মুশরিক’/মূর্তিপূজারী আখ্যা দেয়ার মতো গোমরাহীতে পতিত হয়েছে। তুর্কী ভাষায় অনূদিত ‘কাশফুশ শুবহাত’ পুস্তিকা যেটা গোপনে তুরস্কে প্রবেশ করেছে, সেটাতে বিবৃত হয়েছে যে আহলে সুন্নাতের আক্বীদা-বিশ্বাস ধারণকারী মুসলমানদের জান ও মালামাল হরণ করা মোবাহ/বৈধ। বঙ্গানুবাদকের নোট: ’কাশফুশ শুবহাত’ পুস্তিকাটির এতদসংক্রান্ত ভ্রান্ত আক্বীদার খণ্ডন বিধৃত হয়েছে আমার রচিত ‘ওহাবীদের সংশয় নিরসন’ পুস্তিকায় যা প্রকাশিতব্য}।
_____________
কিতাবঃ ঈমান ও ইসলাম
মূল: মওলানা খালেদ আল-বাগদাদী (رحمة الله)
অনুবাদ: কাজী সাইফুদ্দীন হোসেন
🌍 ইসলামী বিশ্বকোষ এপ্স।
https://play.google.com/store/apps/details?id=com.islamboi.rizwan]
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন