সাহাবীগণের মধ্যকার ইজতিহাদী দ্বন্দ্ব


🔴প্রশ্নঃ 

উপরোক্ত লেখনী প্রতিভাত করে যে যাঁরা হযরত আলী (رضي الله عنه)-এর সাথে দ্বন্দ্বে লিপ্ত হয়েছিলেন, তাঁরাও সঠিক ছিলেন। অথচ আহলে সুন্নাতের উলামায়ে কেরাম বলেছেন যে হযরত আলী (رضي الله عنه)-ই সঠিক ছিলেন এবং তাঁর বিরুদ্ধবাদীবৃন্দ ভুল করেছিলেন; কিন্তু তাঁদেরকে তাঁদের ওযরের কারণে ক্ষমা করা গিয়েছিল এবং এমন কী তাঁরা এর জন্যে সওয়াবও হাসিল করেছিলেন। এ ব্যাপারে ফয়সালা কী?



জবাব:


❏ ইসলামের দু জন মহান ব্যক্তিত্ব ইমাম শাফেয়ী  (رحمة الله) ও খলিফা উমর ইবনে আবদিল আযীয  (رحمة الله) বলেছেন যে, لاَ يَجُوْزُ اَنْ يَقَالَ لاَيِ صَحَابِيِ أنَهُ قَدْ أَخْطَا রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর সাহাবায়ে কেরামের কাউকেই “ভ্রান্ত” আখ্যা দেয়া অনুমতিপ্রাপ্ত নয়। এ কারণেই এটা বলা হয়েছিল ”গুরুজনদের প্রতি ‘ভ্রান্ত’ শব্দটি আরোপ করা চরম ভ্রান্তি।” ছোটদের জন্যে গুরুজনকে “তিনি সঠিক ছিলেন”, তিনি ভ্রান্ত ছিলেন”, “আমরা স্বীকৃতি জানাই”, কিংবা “আমরা অনুমোদন করি না” বলা অনুমতিপ্রাপ্ত নয়। আল্লাহতায়া'লা যেমন ওই সকল মহান ব্যক্তির রক্ত দ্বারা আমাদের হাতকে রঞ্জিত করেন নি, ঠিক তেমনি আমাদেরকেও তাঁদের প্রতি “সঠিক” ও “ভ্রান্ত” শব্দগুলো ব্যবহার করা হতে আমাদের জিহ্বাকে  হেফাযত করতে হবে। যে সকল গভীর জ্ঞানী আলেম তখনকার ঘটনাবলী ও প্রামাণ্য দলিলাদি বিচার-বিশ্লেষণ করে বলেছিলেন যে হযরত আলী (رضي الله عنه)-ই সঠিক ছিলেন এবং তাঁর বিরুদ্ধাচারীবৃন্দ ভুল করেছিলেন, তাঁরা প্রকৃতপক্ষে বুঝিয়েছিলেন যে যদি হযরত আলী (رضي الله عنه) তাঁর বিরুদ্ধবাদীদের সাথে কথা বলার সুযোগ পেতেন, তাহলে তিনি তাঁদেরকে নিজ ইজতেহাদের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ ইজতেহাদ প্রয়োগ করায় পরিচালিত করতে সক্ষম হতেন। বস্তুতঃ “জামাল”-এর যুদ্ধে হযরত যুবাইর ইবনে আউয়াম (رضي الله عنه) হযরত আলী (رضي الله عنه)-এর বিরুদ্ধে ছিলেন, কিন্তু তথ্যসমূহকে আরো গভীরভাবে বিচার-বিশ্লেষণ করার পর তিনি নিজ ইজতেহাদ পরিবর্তন করেন এবং যুদ্ধ বন্ধ করেন। যে সকল আহলে সুন্নাতের আলেম ভুলকে অনুমতিপ্রাপ্ত বিবেচনা করেন, তাঁদের কথাকে ওভাবে গ্রহণ করতে হবে। আর এ কথা বলা অনুমতিপ্রাপ্ত নয় যে হযরত আলী (رضي الله عنه) ও তাঁর অনুসারীগণ সঠিক ছিলেন এবং মা আয়েশা সিদ্দিকা (رضي الله عنه)-এর পক্ষাবলম্বনকারী নবী করীম (ﷺ)-এর অন্যান্য সাহাবী (رضي الله عنه)-বৃন্দ পথভ্রষ্ট ছিলেন।



রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর সাহাবীমণ্ডলীর মধ্যকার এ সকল দ্বন্দ্ব শরীয়তের আইন-কানুনের সহায়তাকারী শাখা-প্রশাখায় প্রয়োগকৃত ইজতেহাদী মতপার্থক্য হতেই নিঃসৃত হয়েছিল। তাঁরা শরীয়তের মৌলিক বিষয়গুলোতে মতভেদ করেন নি।



❏ আজকাল হযরত মোয়াবিয়া (رضي الله عنه) ও হযরত আমর ইবনে আস্ (رضي الله عنه)-এর মতো মহান ইসলামী ব্যক্তিত্বদের বিরুদ্ধে কিছু লোক বেয়াদবিপূর্ণ কুৎসা রটনা করছে


🔺[উদাহরণস্বরূপ, পাকিস্তানের আবুল আলা মওদুদী তার “খেলাফত ও রাজন্ত্র” নামক পুস্তকের ১২৭ পৃষ্ঠায় সাহাবায়ে কেরাম (رضي الله عنه)-কে নির্ভুল জানা “যুলুম” ও “অন্যায়” বলেছে (বাংলা সংস্করণ ১৯৮৯ ইং) – অনুবাদক]।

_____________

কিতাবঃ ঈমান ও ইসলাম

মূল: মওলানা খালেদ আল-বাগদাদী  (رحمة الله)  

অনুবাদ: কাজী সাইফুদ্দীন হোসেন

 🌍 ইসলামী বিশ্বকোষ এপ্স।

https://play.google.com/store/apps/details?id=com.islamboi.rizwan]


Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন