মাসআলাঃ হযরত সৈয়্যদা ফাতেমা বিনতে রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর পবিত্র শান ও মান-মর্যাদা সম্পর্কে স্বয়ং হুযূর মোস্তফা (ﷺ) ইরশাদ করেন,
‘আমার সাহেবজাদী ফাতেমা (رضي الله عنه) হচ্ছেন, মানব হুর। সাধারণ মহিলারা রক্তস্রাবের কারণে যে অপবিত্র হয়ে থাকে, তিনি তা হতে পাক-পবিত্র। আল্লাহপাক তাঁর নাম ফাতেমা এ জন্য রেখেছেন যে, আল্লাহ্ তা‘আলা তাঁর সাথে ভালবাসা ও মুহাব্বত স্থাপনকারীদেরকে দোযখের আগুন থেকে মুক্তি দান করেছেন।’ ২৬২
➥২৬২. আল-আমান ওয়াল ‘উলা।
উক্ত হাদীসখানা খতীবে বাগদাদী (رحمة الله) হযরত ইবনে আব্বাস (رضي الله عنه) হতে বর্ণনা করেছেন। উক্ত বর্ণনা হতে একথা প্রতীয়মান হয় যে, সৈয়্যদা হযরত ফাতেমা (رضي الله عنه) মানবীয় হুর। ২৬৩
➥২৬৩. সীরাতে মোস্তফা জানে রহমত, খণ্ড-৩, পৃষ্ঠা-২১৪।
মাসআলাঃ হযরত সৈয়্যদাতুনা বতুল ফাতিমাতুয যাহরা (رضي الله عنه)-এর পবিত্র আওলাদগণ হচ্ছেন ‘আহলে বাইত’। অতঃপর হযরত আলী (رضي الله عنه), হযরত আকীল (رضي الله عنه) এবং হযরত জাফর সাদেক (رضي الله عنه) ও হযরত আব্বাস (رضي الله عنه)-এর বংশধরেরা ‘আহলে বাইত’। উম্মুহাতুল মু’মিনীন রিদওয়ানুল্লাহি তা‘আলা আজমাইনরা হচ্ছেন আহলে বাইত। ২৬৪
➥২৬৪. ইরফানে শরীয়ত, খণ্ড-১; সীরাতে মুস্তফা জানে রহমত, খণ্ড-৩, পৃষ্ঠা-২১৬।
মাসআলাঃ পৃথিবীতে অধিক খাদ্য ভক্ষণকারী জন্তু। হাদিস শরীফের মধ্যে বর্ণিত আছে- আল্লাহ্ তা’আলার সৃষ্টি জগতে এমন একটি জন্তুও রয়েছে। যেটি সমগ্র সৃষ্টি জগতের খাদ্য একাই প্রতিদিন খেয়ে থাকেন। অর্থাৎ অপরার সৃষ্টি যেমন- জ্বীন, ইনসান, পশু-পাখি, তথা যমিনে বিচরণকারী সৃষ্টি ইত্যাদি যে পরিমাণ খাদ্য প্রতিদিন খেয়ে থাকে ঐ জন্তুটি একাই একদিন সে খাদ্য খেয়ে থাকে।
মাসআলাঃ মৃত্যু কামনা করা মাকরূহ। ২৬৫
➥২৬৫. দুররে মুখতার।
মাসআলাঃ ময়্যত তথা মৃতের পাশে শেষ অবস্থায় সূরা ইয়াসিন ও সূরা ওয়াদ শরীফ পাঠ করা মুস্তাহাব।
মাসআলাঃ দশই মুহররম পবিত্র আশুরা দিবসে নিজ পরিবার-পরিজনকে নিয়ে সন্তোষজনক সহকারে খানা-পানিতে ব্যাপকতা করলে আল্লাহ্ তা’আলা তার পরিবারে পুরো বছর রিযিকের মধ্যে প্রশস্ততা দান করবে।২৬৬
➥২৬৬. আল আস্রারুল মুহাম্মদীয়া।
মাসআলাঃ পবিত্র আশুরা দিবসে ভাল কাজ করা মুস্তাহাব। যেমন- সদকা-খায়রাত, নফল রোযা, যিকির ইত্যাদি।
প্রশ্নঃ খতমে খাজাগান কী বিদআত? বর্ণনা করুন।
মাসআলাঃ
উত্তরঃ খতমে খাজাগান সকল বুযূর্গদের মা’মুল (রীতি)। আশরাফ আলী থানভী এর দরবারেও এ আমল জারী ছিল। এ জন্য উহাকে বিদআত বলাই বিদআত। ২৬৭
➥২৬৭. মুফতী ওয়ালী হাসান বনূরী টাউন করাচী।
খতমে খাজাগান বিদআত নয়, উহাকে বিদআত হিসেবে গণ্য করা বিদআতের হাক্বীক্বত সম্পর্কে জ্ঞানহীনতার দলীল। উহা পাঠকরা না প্রত্যেক ব্যক্তির জন্য আবশ্যক মনে করা হয়, না পরিত্যাগকারীকে তিরিস্কার করা হয়।
অতএব, ইহা একটি বরকতময় ওয়াজীফা হিসেবে পড়া হয়, এজন্য উহাকে বিদআত বলা সহী নয়। এ ওয়াজীফা বন্ধ করা অপ্রয়োজনীয় ও অনুচিত কাজ। ২৬৮
➥২৬৮. বন্দা আবদুস্ সত্তার, মুফতী জামে খায়রুল মাদারিস মুলতান, খায়রুল ফতাওয়া, ২য় খণ্ড, পৃষ্ঠা-২৬৪।
প্রশ্নঃ জ্বীনদের উপর যখন মৃত্যু আসে তখন তাদের অস্তিত্ব বা দেহ কোথায় দাফন করা হয়?
মাসআলাঃ
উত্তরঃ মাওলানা আনওয়ার শাহ কাশমীরী এর মালফুজাতের মধ্যে রয়েছে জ্বীন শূন্য স্থানে বা খালি ময়দানে দাফন হয়। (আল্লাহ ও তাঁর রাসূল অধিকজ্ঞাত)
মাসআলাঃ
প্রশ্নঃ শিশুদের বা বালকদের ইসলাম গ্রহনীয় কি-না? শিশুদের বা বালকদের মুরতাদ বা ধর্ম ত্যাগী হওয়া সহী কি-না?
উত্তরঃ তাঁর নিকট সাহায্য প্রার্থনাকারি। যে শিশু বা বালক জ্ঞানবান হয় তার ইসলাম সহী ও গ্রহণীয় এবং তার মুরতাদ হওয়াও সহী, যেভাবে তার ইসলাম সহী। আর এমন শিশু বা বালক এর উপর মুসলমান হয়ে যাওয়ার জন্য বাধ্য করা হবে, হত্যা করা যাবেনা। মুরতাদের স্ত্রীকে ছাড়িয়ে নেয়া হবে যাতে সে ইসলামের উপর প্রতিষ্ঠিত থাকতে পারে। (আল্লাহ ও তাঁর রাসূল অধিক জ্ঞাত)
মাসআলাঃ ফাসিকদের দাওয়াত কবুল করতে হুজুর (ﷺ) নিষেধ করেছেন। যথা: হযরত ইমরান বিন হোসাইন (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত আছে, রাসূল (ﷺ) ফাসিকের দাওয়াত কবুল করতে নিষেধ করেছেন। ২৬৯
➥২৬৯. মিশকাত শরীফ।
মাসআলাঃ ফাসিকের সাক্ষ্যও গ্রহণযোগ্য নয়।
মাসআলাঃ ফাসিকের পিছনে নামায পড়া জায়েয আছে (মাকরূহে তাহরীমী সহকারে) হাদীস শরীফে এসেছে- প্রত্যেক নেক্কার ও বদকারের পিছনে নামায পড়া জায়েয হবে।
মাসআলাঃ ওয়াজকারীর খুতবা বসে পড়া জায়েয আছে, কেননা উহা ওয়াজিব খুতবা নয়।
মাসআলাঃ কবরের আযাব থেকে নিরাপদ থাকার সুসংবাদ জুমার রাত বা দিনে মৃত্যুবরণকারীর জন্য, দাফন হওয়া ব্যক্তির জন্য নয়, হাদীস শরীফে রয়েছে “যে মুসলিম ব্যক্তি জুমার দিনে বা রাতে মৃত্যুবরণ করবে আল্লাহ তায়ালা তাকে কবরের ফিতনা থেকে রক্ষা করবেন।” মুল্লা আলী ক্বারী (رحمة الله) বলেন- কবরের ফিতনা দ্বারা উদ্দেশ্য হল- কবরের আযাব ও প্রশ্ন। ২৭০
➥২৭০. মিরকাত শরহে মিশকাত, বাবু আযাবিল কবর, ২য় খণ্ড, পৃষ্ঠা-১১২।
মাসআলাঃ সামুদ্রিক জাহাজে জাহাজের কর্মচারী ক্যাপ্টেনের তা’বি (অনুসারী)।
মাসআলাঃ হুজুর মুস্তফা (ﷺ) এর নিকট প্রত্যেক উম্মতের অবস্থা পেশ করা হয়। হযরত আনাস (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন- রাসূল (ﷺ) ইরশাদ করেন আমাকে আমার উম্মতের ঐ সমস্ত আমল দেখানো হয়েছে যা আল্লাহর নিকট সাওয়াব হিসেবে গণ্য। এমন কি মসজিদ থেকে বের করে নিক্ষেপ করাও আমি ঐ আমল সমূহের মধ্যে দেখেছি, আবু দাউদ, তিরমিযী আর ইবনে খুজাইমা এ হাদীসকে সহী বলেছেন। অপর এক হাদীসে এসেছে- হুজুর (ﷺ) ইরশাদ করেছেন- আল্লাহ তায়ালার যে সমস্ত ফেরেশতা কার্যাবলী পরিচালনার দায়িত্বে নিয়োজিত থাকে তারা উম্মতে মুহাম্মদীর সমস্ত অবস্থা গোপন ও প্রকাশ্য সমস্ত অবস্থা হুজুর মুস্তফা (ﷺ)কে জানিয়ে দিতেন। ২৭১
➥২৭১. আবু দাউদ ও তিরমিযী।
মাসআলাঃ “কাবা শরীফের সম্মানের চেয়ে মু’মিনের সম্মান উত্তম” এ বাণীটি শুদ্ধ কিনা?
এটা হাদীস শরীফ ইবনে ওমর এর সনদে, কাবা শরীফ থেকে মু’মিন অধিক সম্মানের পাত্র, ইবনে ওমর (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত, নিশ্চয় রাসূল (ﷺ) ইরশাদ করেন- মক্কা শরীফের সম্মানের চেয়ে আল্লাহর নিকট মু’মিনের সম্মান অধিক। নিশ্চয় আল্লাহ্ তায়ালা মু’মিনের রক্ত (জীবন) সম্পদ, সম্মান ও মন্দ ধারণা হারাম করেছেন। ২৭২
➥২৭২. তাময়ীজুত্বতায়্যিব, পৃষ্ঠা ১৮০।
“নেক বান্দাগণের নিকট যা সৎকর্ম তা নৈকট্য প্রাপ্ত বান্দা গণের নিকট মন্দ কর্ম হিসেবে বিবেচিত” এটা হাদীস? যদি হাদীস হয় তাহলে কোন কিতাবে উল্লেখ আছে কিংবা কার বাণী?
এটা আবু সাঈদ র্খারাজ (رضي الله عنه) এর বাণী, এটা হাদীস নয়। ২৭৩
➥২৭৩. তাময়ীজুত্বতায়্যিব, পৃষ্ঠা ৭০।
মাসআলাঃ হাজরে আসওয়াদ আল্লাহর ডান হাত, ইবনে আব্বাস (رضي الله عنه) থেকে তাবরানী এ হাদীসটি বর্ণনা করেছেন।
মাসআলাঃ হাজরে আসওয়াদ জান্নাত থেকে আগত, ইবনে আব্বাস (رضي الله عنه) থেকে সহী হাদীসটি ইমাম নাসায়ী (رضي الله عنه) বর্ণনা করেছেন।
মাসআলাঃ ‘রিয়া শিরকে আসগর’- সাদ্দাদ বিন আউস (رضي الله عنه) থেকে তাবরানী এ হাদীসটি বর্ণনা করেছেন।
মাসআলাঃ রজব আল্লাহর মাস, শা’বান আমার মাস, আর রমযান হল আমার উম্মতের মাস, হযরত আনাস (رضي الله عنه) থেকে মারফু হিসেবে দায়লমী এ হাদীসটি বর্ণনা করেছেন।
মাসআলাঃ যে ব্যক্তি প্রসিদ্ধ লাভের জন্য পোশাক পরিধান করবে- কিয়ামতের ময়দানে আল্লাহ্ তায়ালা তাকে অপমানের পোশাক পরিধান করাবেন। আহমদ আবু দাউদ এবং ইবনে মাযা হাসান সনদে ইবনে ওমর (رضي الله عنه) মারফু হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
মাসআলাঃ তোমরা মু’মিনের তীক্ষ্ম দৃষ্টিকে ভয় কর কেননা সে আল্লাহর নূর দিয়ে দেখেন। তিরমিযী ও অন্যান্য হাদীস বিশারদগণ আবু সাঈদ খুদরী (رضي الله عنه) থেকে মারফু ত্বরীকায় বর্ণনা করেছেন। ২৭৪
➥২৭৪. তাময়ীজুত্বতায়্যিব, পৃষ্ঠা ৯।
__________________
কিতাব : মুনীয়াতুল মুছ্লেমীন (মাসআলা-মাসায়েল) [২য় খণ্ড]
মূলঃ মুহাম্মদ আজিজুল হক আল্-কাদেরী (রহঃ)
সূত্রঃ 🌍 ইসলামী বিশ্বকোষ এপ্স।
https://play.google.com/store/apps/details?id=com.islamboi.rizwan
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন