রাসূলের নামের তা‘যিম-

 

রাসূলের নামের তা‘যিম-



❏ ইমাম দায়লামি (رحمة الله) সংকলন করেন-



حَدِيثِ أَبِي بَكْرٍ الصِّدِّيقِ أَنَّهُ لَمَّا سَمِعَ قول المؤذن أشهد أن محمد رَسُولُ اللَّه قَالَ هَذَا، وَقَبَّلَ بَاطِنَ الأُنْمُلَتَيْنِ السَّبَّابَتَيْنِ وَمَسَحَ عَيْنَيْهِ، فَقَالَ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: مَنْ فَعَلَ مِثْلَ مَا فَعَلَ خَلِيلِي فَقَدْ حَلَّتْ عَلَيْهِ شَفَاعَتِي- رواه الديلمى المسند الفردوس



-‘‘হযরত আবু বকর (رضي الله عنه) হতে বর্ণিত, তিনি মুয়ায্যিনকে ‘আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার’ রাসূলুল্লাহ বলতে শোনলেন, তখন তিনিও তা বললেন এবং বৃদ্ধাঙ্গুলীদ্বয়ে চুমু খেয়ে তা চোখে বুলিয়ে নিলেন। তা দেখে রাসূল (ﷺ) ইরশাদ করেন : যে ব্যক্তি আমার বন্ধুর ন্যায় আমল করবে, তার জন্য আমার সুপারিশ বৈধ হয়ে গেল।’’  ১৩


{১৩ .ইমাম আবদুর রহমান সাখাভী : মাকাসিদুল হাসানা : ৩৮৩ পৃ. : হা/১০২১, আল্লামা আজলূনী, কাশফুল খাফা : ২/২৫৯ পৃ. হা/২২৯৬, আল্লামা মোল্লা আলী ক্বারী : আসরারুল মারফূ : ৩১২ পৃষ্ঠা : হাদিস : ৪৫৩, আল্লামা তাহতাভী : মারাকিল ফালাহ : ১৬৫ পৃ. : কিতাবুল আযান, আল্লামা শাওকানী : ফাওয়াইদুল  মাজমু‘আত : ১/৩৯ পৃ., ইসমাঈল হাক্কী : তাফসীরে রুহুল বায়ান : ৭/২২৯ পৃ., তাহের পাটনী : তাযকিরাতুল মওদ্বুআত : ৩৪ পৃ., জালালুদ্দীন সূয়তী : লাআলীল মাসনূ আ : ১৬৮-১৭০ পৃ., আব্দুল হাই লাক্ষনৌভী : আছারুল মারফু‘আ: ১৮২ পৃ., শায়খ নাসিরুদ্দীন আলবানী : সিল..দ্বঈফাহ : ১/১০২ পৃ. হাদিস : ৭৩}


বাতিলপন্থীদের একটি ধোঁকা: 


বাতিলপন্থীদের দাবি হল ইমাম সাখাভী (رحمة الله) হযরত আবু বকর (رضي الله عنه) এর বর্ণিত হাদিসটি সংকলন করে বলেন, لَايَصِحُّ ‘হাদিসটি সহীহ নয়।’  ১৪


{১৪. ইমাম সাখাভী : মাকাসিদুল হাসানা : ৩৮৪ পৃ. : হাদিস : ১০২১}



সমস্ত মুহাদ্দিসগণ একমত যে হাদিসটি ‘সহীহ নয়’ শব্দ দ্বারা হাদিসটি ‘হাসান’ বুঝায়।


❏ আল্লামা মোল্লা আলী ক্বারী (رحمة الله) বলেন-



وَقَالَ ابْنُ الْهَمَّامِ: وَقَوْلُ مَنْ يَقُولُ فِي حَدِيثٍ أَنَّهُ لَمْ يَصِحَّ إِنْ سَلِمَ لَمْ يُقْدَحْ ; لِأَنَّ الْحُجَّةَ لَا تَتَوَقَّفُ عَلَى الصِّحَّةِ، بَلِ الْحَسَنُ كَافٍ،– فصل الثانى من باب: ما يجوز من العمل فى الصلاة



-‘‘ইমাম কামালুদ্দীন ইবনু হুমাম (رحمة الله) বলেন, কোন হাদিস সম্পর্কে কোন মুহাদ্দিস যদি বলেন যে এ হাদিসটি সহীহ (বিশুদ্ধ) নয়, তাদের কথা সত্য বলে মান্য করা হলেও কোন অসুবিধা নেই, যেহেতু (শরীয়তের) দলীল বা প্রমাণ হিসেবে সাব্যস্ত হওয়ার জন্য শুধু (হাদিস) সহীহ বা বিশুদ্ধ হওয়া নির্ভরশীল নয়। সনদ বা সূত্রের দিক দিয়ে ‘হাসান’ হলেও (হাদিসটি শরীয়তের দলীল হিসেবে সাব্যস্ত হওয়ার জন্য) যথেষ্ট।’’  ১৫


{১৫ . আল্লামা মোল্লা আলী ক্বারী : মিরকাত : ৩/৭৭পৃ, হাদিস : ১০৮, দারুল ফিকর ইলমিয়্যাহ, বয়রুত, লেবানন।}



❏ আল্লামা ইবনে হাজার মক্কী (رحمة الله) তার কিতাবে লিখেন-



وَقَول أَحْمد إِنَّه حَدِيث لَا يَصِحُّ أَيْ لِذَاتِه فَلَا يَنْفِي كَوْنه حَسْنًا لِغَيْرِه وَالْحَسَن لِغَيْرِه يَحْتَجُّ بِهِ كَمَا بَيْنَ فِي عِلْمِ الْحَدِيْث -(الصَّوَاعِقُ الْمُحْرِقَة عَلى أَهْل الرفض والضلال والزندقة:  خاتمة الفصل الاول من الباب: الحادى عشر:২২৮)



-‘‘ইমাম ইবনে হাজার মাক্কী (رحمة الله) বলেন, ইমাম আহমদ বিন হাম্বল (رحمة الله)‘র একটি হাদিস প্রসঙ্গে বক্তব্য হাদিসটি  لَايَصِحُّবিশুদ্ধ নয় এর অর্থ হবে সহিহ লিজাতিহী তথা জাতি বা প্রকৃত অর্থে সহীহ নয় উক্ত হাদিসটি (সনদের দিক দিয়ে) হাসান লিজাতিহী বা অন্য সনদে হাসান লিগায়রিহী (জাতিগত সহীহ না হওয়া; সংশ্লিষ্ট বিষয়ের সহীহ’র কারণে নিজে সহীহ হওয়া।) হওয়াকে মানা (নিষেধ) করে না। আর হাসান লিগায়রিহীও (শরিয়তের) প্রমাণ হিসেবে গ্রহণ করা যায়। যা ইলমে হাদিস তথা হাদিসশাস্ত্র হতে জানা যায়।’’  ১৬


{১৬. ইবনে হাজার মক্কী : আস-সাওয়ায়েকুল মুহরিকা, ২য় খণ্ড, পৃ-৫৩৬, মুয়াস্সাতুর রিসালা, বয়রুত, লেবানন।}



❏ আল্লামা মোল্লা আলী ক্বারী (رحمة الله) তাঁর গ্রন্থে ইমাম সাখাভী (رحمة الله)‘র রায় পেশ করে সমাধানের কথা বলেন যে-



قُلْتُ وَإِذَا ثَبَتَ رَفْعُهُ عَلَى الصَّدِّيقِ فَيَكْفِي الْعَمَلُ بِهِ لِقَوْلِهِ عَلَيْهِ الصَّلَاةُ وَالسَّلَامُ عَلَيْكُمْ بِسُنَّتِي وَسِنَّةِ الْخُلَفَاءِ الرَّاشِدِين



-‘‘আমার কথা হলো, এ হাদিসটির সনদ যেহেতু হযরত আবু বকর সিদ্দিক (رضي الله عنه) পর্যন্ত প্রসারিত (মাওকুফ), সেহেতু আমলের জন্য এতটুকুই যথেষ্ট। কেননা হুযুর (ﷺ) ইরশাদ  ১৭


{১৭ .ক. ইমাম আবু দাউদ : আস্-সুনান : হাদিস : ৪৬০৭, হযরত উমর (رضي الله عنه) এর সূত্রে, তিরমিযী : আস্-সুনান : হাদিস : ২৬৭৬, ইবনে মাজাহ : আস্-সুনান : হাদিস : ৪২, ইমাম ইবনুল র্বা : জামিউল বায়ান ওয়াল ইলমে বি ফাদ্বলিহী : ২/৯০ পৃ. ইমাম আহমদ : আল মুসনাদ : ৪/১২৭ পৃষ্ঠা হযরত ইরবায বিন সারিয়া (رضي الله عنه) এর সূত্রে।}



করেছেন, তোমরা আমার সুন্নাত এবং আমার খুলাফায়ে রাশেদীনের সুন্নাতকে আকড়ে ধরো।’’ ১৮


{১৮. আল্লামা মোল্লা আলী ক্বারী : আসরারুল মারফ‘‚আ : ২১০ পৃ., হা/৮২৯, আল্লামা আজলূনী : কাশফুল খাফা : ২/২৭০ পৃ. : হা/২২৯৬}



আক্বিদা


এ হাদিস থেকে জানা গেল রাসূল (ﷺ)-এর নাম মুবারককে তা‘যিম করা ইসলামের প্রথম খলিফার সুন্নাত এবং রাসূল (ﷺ)-এর শাফায়াত লাভ করার মাধ্যম। ১৯


{১৯. সম্পাদক কর্তৃক সংযোজিত।}


____________________

আকাইদে সাহাবাহ

(সাহাবায়ে কিরামদের সাথে সুন্নি আক্বিদার সাদৃশ্য)

মূল:আল্লামা আবুল হামিদ মুহাম্মদ যিয়াউল্লাহ

ক্বাদেরী আশরাফী (رحمة الله)

বঙ্গানুবাদ: মাওলানা হাফেয মুহাম্মদ আতিকুর রহমান

সূত্রঃ 🌍 ইসলামী বিশ্বকোষ এপ্স।

https://play.google.com/store/apps/details?id=com.islamboi.rizwan


Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন