জামা’আত-উত-তাবলীগিয়্যা


যিনদিক্বদের আরেকটি গোমরাহ দল যারা ভারতে আবির্ভূত হয়েছে, তাদের নাম হচ্ছে জামা’আত-উত-তাবলীগিয়্যা। তাদের দলটি প্রথমে গঠিত হয় ১৩৪৫ হিজরী মোতাবেক ১৯২৬ খৃষ্টাব্দ সালে, মৌলভী ইলিয়াস নামের জনৈক অজ্ঞ লোকের মাধ্যমে। সে ধরে নেয় যে মুসলমানবৃন্দ ‘ইসলামের সত্য পথ হতে বিচ্যুত হয়েছেন’; অধিকন্তু সে এক স্বপ্ন দেখে যার মধ্যে তাকে খোদায়ী নির্দেশ দেয়া হয় ‘তাঁদেরকে বিচ্যুতি থেকে রক্ষা করতে হবে।’ সে তার শিক্ষকদের কাছ থেকে যা যা শিখেছিলো, তা-ই ব্যক্ত করে। এই শিক্ষকদের মধ্যে ছিলো নাযীর হুসাইন, রশীদ আহমদ গাঙ্গুহী ও খলীল আহমদ সাহারানপুরী, যারা নিজেরাও গোমরাহ। মুসলমানদেরকে পথভ্রষ্ট করার জন্যে যে ধোকাবাজির আশ্রয় তারা নিচ্ছে তা হলো এ কথাটি: ‘সর্বদা নামায ও জামাআতের কথা বলবে (মানে প্রচার করবে)।’ তবে বাস্তবতা হলো, গোমরাহ-পথভ্রষ্টদের পালিত কোনো নামায বা অন্য কোনো এবাদত-বন্দেগী (আল্লাহর দরবারে) গ্রহণযোগ্য নয়; কেননা তারা আহলে সুন্নাতে ওয়াল জামাআত সম্প্রদায়ের অন্তর্ভুক্ত নয়। এসব লোকের প্রথমে যা করা দরকার তা হলো উলামাবৃন্দের বইপত্র পাঠ করা, গোমরাহ ধ্যানধারণা ত্যাগ করা এবং প্রকৃত মুসলমান হওয়া। যেসব লোক আল-ক্বুরআনের অন্তর্নিহিত অর্থসম্বলিত আয়াতগুলোর অপব্যাখ্যা করে, তাদেরকে বলা হয় বেদআতী বা গোমরাহ। আর যেসব দ্বীনের শত্রু নিজেদের ষড়যন্ত্রমূলক ও গোমরাহীপূর্ণ চিন্তাধারা অনুযায়ী আয়াতে করীমার অর্থারোপ করে, তাদের বলা হয় যিনদিক্ব। এভাবে তারা ক্বুরআন মজীদ ও ইসলাম ধর্ম পরিবর্তন করতে অপপ্রয়াস পাচ্ছে। এই সমস্ত গোমরাহী যারা তৈরি ও প্রচার-প্রসার করছে, তারা হচ্ছে সবচেয়ে বড় শত্রু বৃটিশ রাজ; আর তারাই এই হীন উদ্দেশ্যে কোটি কোটি টাকা খরচ করছে। ‘তাবলীগী জামা’আতে‘র লোকেরা যারা নিরেট মূর্খ ও বৃটিশের পাতা ফাঁদে পড়ে জঘন্য ক্রীড়নকে পরিণত, তারা দৈনিক (পাঁচ নামায ওয়াক্ত) নামায ও মিথ্যের বেসাতি দ্বারা নিজেদেরকে সুন্নী দাবি করে মুসলমানদেরকে ধোকা দেয়ার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। এ ধরনের লোক হচ্ছে (মসজিদের) মিনারার চূড়ায় বকের বাসার মতোই; আর তারা জাহান্নামে সর্বনিম্ন স্তরে শাস্তি পাবে। দীর্ঘ পাগড়ি, লম্বা দাড়ি ও বিশাল জুব্বা নিয়ে এবং ক্বুরআনের আয়াত তেলাওয়াত করে ওর অপব্যাখ্যা করাটা হলো মুসলমানদেরকে ধোকা দেয়ার ঘৃণ্য কর্মকাণ্ডে এসব লোকের অহরহ ব্যবহৃত চালগুলোর একটি। তবে একটি হাদীস শরীফে বিবৃত হয়েছে:



إِنَّ اللَّهَ لَا يَنْظُرُ إِلَى أَجْسَادِكُمْ وَلَا إِلَى صُوَرِكُمْ وَلَكِنْ يَنْظُرُ إِلَى قُلُوبِكُمْ



“ইন্নাল্লা’হা লা’ এয়ানযুরু ইলা’ সুওয়ারিকুম ওয়া সিয়্যা’বিকুম ওয়া লা’কিন এয়ানযুরু ইলা’ ক্বুলূবিকুম ওয়া নিয়্যা’তিকুম।” অর্থাৎ, আল্লাহতায়া'লা তোমাদের আকার-আকৃতি ও জামাকাপড় দেখেন না, কিন্তু তোমাদের অন্তর ও উদ্দেশ্য দেখেন।



এখলাস ওয়াক্বফ  (তুরস্ক) সংস্থার বইপত্র যেগুলো প্রমাণ করে যে ওই সব লোকের কথাবার্তা মিথ্যে, সেগুলোর কোনো জবাব যেহেতু তারা দিতে পারেনি সেহেতু তারা বলে, “এখলাস ওয়াক্বফ’র প্রকাশিত বইপত্র ভ্রান্ত ও গোমরাহীপূর্ণ। ওই সব বই পড়বেন না।” ইসলামের শত্রু এই গোমরাহ ও যিনদিক্বের দলগুলোকে চেনার সবচেয়ে স্পষ্ট চিহ্ন হচ্ছে তাদের দ্বারা সুন্নী উলামাবৃন্দের প্রতি গোমরাহীর অপবাদ আরোপের মাধ্যমে তাঁদেরই শিক্ষাসমূহ প্রচারকারী বইপত্র পড়া হতে মানুষকে নিবৃত্ত করা। আমাদের তুর্কী ভাষায় রচিত ‘ফা‘য়দালি বিলগিলার’ (উপকারী তথ্য) শীর্ষক বইটি এসব লোকের দ্বারা ইসলামের ক্ষতি সাধনের বিশদ বিবরণ পেশ করে এবং আহলে সুন্নাতের জ্ঞান বিশারদদের দ্বারা তাদের প্রতি প্রদত্ত উত্তর-ও বিধৃত করে (আমাদের ‘সুন্নী পথ’, ’অনন্ত আশীর্বাদ’ ৫ খণ্ড, ‘ঈমান ও ইসলাম’ এবং ‘অকাট্য প্রামাণ্য দলিল’ পুস্তকগুলো দেখুন)।]

_____________

কিতাবঃ ঈমান ও ইসলাম

মূল: মওলানা খালেদ আল-বাগদাদী  (رحمة الله)  

অনুবাদ: কাজী সাইফুদ্দীন হোসেন

 🌍 ইসলামী বিশ্বকোষ এপ্স।

https://play.google.com/store/apps/details?id=com.islamboi.rizwan]


Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন